ঢাকা , বুধবার, ০২ এপ্রিল ২০২৫ , ১৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুলাই আন্দোলনে শহীদ সেলিম তালুকদার বাবা হলেন মৃত্যুর সাত মাস পর


আপডেট সময় : ২০২৫-০৩-০৯ ২২:০৭:৪৩
জুলাই আন্দোলনে শহীদ সেলিম তালুকদার বাবা হলেন মৃত্যুর সাত মাস পর জুলাই আন্দোলনে শহীদ সেলিম তালুকদার বাবা হলেন মৃত্যুর সাত মাস পর

 
মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ২৪ এর জুলাই-আগস্টে ছাত্রজনতার আন্দোলনে নলছিটির শহীদ সেলিম তালুকদারের স্ত্রী সুমী আক্তারের গর্ভে ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে।
 
শনিবার (৮ মার্চ) রাত ৮ টার দিকে ঝলকাঠি শহরের একটি ক্লিনিকে সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে সন্তান দুনিয়ার আলো দেখতে পায়। ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মল্লিকপুর এলাকার বাসিন্দা সেলিম তালুকদার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৩১জুলাই নিহত হন।

অথচ এর তিনদিন পরই ছিল (৪ আগস্ট) প্রথম বিবাহবার্ষিকী, ৮ আগস্ট পরীক্ষায় ধরা পড়ে সেলিমের স্ত্রী সুমী আক্তার আড়াইমাসের অন্তসত্ত্বা। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সুমী আক্তারের শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান দুনিয়ার আলো দেখতে পায় কিন্তু সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারেননি সেলিম তালুকদার।  মৃত্যুর সাত মাস সাতদিন পর  শহীদ সেলিমের উত্তরাধকিার আসলো পৃথিবিতে।
 
সেলিম তালুকদার (২৮) একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। আন্দোলন চলাকালে গত ১৮জুলাই রাজধানীর মধ্যবাড্ডায় গুলিবিদ্ধ হন। ৩১ জুলাই রাতে ঢাকার হাসপাতালে মারা যান। ২ আগস্ট সকালে জানাজা শেষে নলছিটি পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয় সেলিম তালুকদারকে।
 
সেলিম নলছিটি উপজেলার মল্লিকপুর এলাকার সুলতান হোসেন তালুকদারের ছেলে। তিনি বিজিএমই ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে আড়াই বছর আগে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছিলেন। পরে নারায়ণগঞ্জে একটি  বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সহকারী মার্চেন্ডাইজার পদে চাকরি শুরু করেন। তারা তিন বোন ও এক ভাই।  সেলিম ছিলেন মেজ।
 
নিহত সেলিমের স্ত্রী সুমী জানান, ওইদিন সকালে বাড্ডা লিংক রোডের কুমিল্লাপাড়ার বাসা থেকে বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দেন সেলিম। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংঘর্ষের মধ্যে আটকে পড়েন তিনি। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন।
 
সুমি আক্তার আরও বলেন, ‘আমার স্বামী শহীদ হয়েছেন। তার স্মৃতি হিসেবে এই সন্তানই আমার কাছে থাকবে। আমার একটাই চাওয়া আমার সন্তানেন যেন কারও কাছে হাত পাতা না লাগে। আমি যতদিন বাঁচবো শহীদ সেলিমের স্ত্রী হিসেবে বাঁচবো। সন্তানকে তার পরিচয় দিয়ে মানুষ করবো।’ 
 
ছেলের শোকে এখনো কাতর মা সেলিনা বেগম। তিনি বলেন, এখন যদি সেলিম বেঁচে থাকতো তাহলে প্রথম সন্তান, কত আনন্দ পেতো। তা সেলিমের ভাগ্যে নেই। 
 
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের চিকিৎসার পেছনে প্রায় ১৮ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। ধারদেনা করে এসব টাকা জোগাড় করেছি। সেই টাকা এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। আমরা চাই আমার ছেলেকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হোক।’
 
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বলেন, জুলাই -আগস্ট বিপ্লবে তালিকাভুক্ত শহীদ সেলিম তালুকদারের স্ত্রী সুমি আক্তার শনিবার রাতে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে শুনেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে খোঁজ খবর নিতে বলেছি। 
 
তিনি আরও বলেন, ক্লিনিক্যাল যাবতীয় খরচ জেলা প্রশাসন বহন করবে এবং রবিবার আমরা ক্লিনিকে নবজাতককে দেখতে যাবো।



 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ